গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের সম্প্রসারিত নতুন ভবন নির্মাণের জন্য নির্ধারিত স্থান ও মাস্টারপ্ল্যান প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বক্তব্য
Apr 21, 2025

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের সম্প্রসারিত নতুন ভবন নির্মাণের জন্য নির্ধারিত স্থান ও মাস্টারপ্ল্যান প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বক্তব্য

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ২১ এপ্রিল ২০২৫

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের সম্প্রসারিত নতুন ভবন নির্মাণের জন্য নির্ধারিত স্থান এবং উক্ত স্থানে বৃক্ষ কর্তন নিয়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন-বর্তমান শিক্ষার্থীদের নানা ধরনের বক্তব্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। 

প্রসঙ্গ: গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের সম্প্রসারিত নতুন ভবন নির্মাণের জন্য নির্ধারিত স্থান নির্বাচনের যৌক্তিকতা

সংশ্লিষ্ট সকলের জ্ঞাতার্থে জানানো যাচ্ছে যে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘অধিকতর উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ভবনসমূহ নির্মাণের লক্ষ্যে স্থান নির্ধারণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন টেকনিক্যাল ম্যানেজমেন্ট কমিটি (টিএমসি) পুণর্গঠন করে। পূণর্গঠিত টিএমসি’র সকল সদস্য পূর্বের প্রশাসন কর্তৃক কলা ও মানবিকী অনুষদ এবং গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের সম্প্রসারিত ভবন দু’টি নির্মাণের স্থান পরিদর্শন করে পর্যালোচনাপূর্বক বাতিল করার সুপারিশ করলে তা প্রশাসন কর্তৃক অনুমোদিত হয়। 

গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের নতুন ভবন নির্মাণের লক্ষ্যে টেকনিক্যাল ম্যানেজমেন্ট কমিটি (টিএমসি) পরবর্তীতে সরেজমিনে নতুন সম্ভাব্য তিনটি স্থান পরিদর্শন করে। স্থান তিনটি হলো- গণিত ও পরিসংখ্যান ভবন সংলগ্ন এলাকা, ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রের উত্তর পার্শ্ব সংলগ্ন এলাকা, পদার্থ বিজ্ঞান ভবনের পশ্চিম পাশে এবং লেকচার থিয়েটার-এর দক্ষিণ উইংয়ের দক্ষিণ পার্শ^বর্তী এলাকা। টিএমসি সরেজমিনে পরিদর্শনপূর্বক বায়োডাইভার্সিটি ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট এর ভিত্তিতে পদার্থ বিজ্ঞান ভবনের পশ্চিম পাশে এবং লেকচার থিয়েটার-এর দক্ষিণ উইংয়ের দক্ষিণ পার্শ্ববর্তী স্থানটি চূড়ান্ত করার জন্য সুপারিশ করে। পরবর্তীতে উদ্ভিদ ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অভিজ্ঞ চারজন বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে গঠিত বায়োডাইভার্সিটি টিম সরেজমিনে ক্যাম্পাসের ৩টি স্থানের জীববৈচিত্র্যের ওপর জরিপ সম্পন্ন করে প্রশাসনের নিকট একটি প্রতিবেদন জমা দেয়। সেই প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই পদার্থ বিজ্ঞান ভবনের পশ্চিম পাশে এবং লেকচার থিয়েটার-এর দক্ষিণ উইংয়ের দক্ষিণ পার্শ^বর্তী স্থান গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের নতুন ভবন নির্মাণের জন্য নির্বাচন করা হয়। 

মাঠ জরিপের তথ্য অনুযায়ী, এই স্থানটিতে ভবন নির্মাণ হলে অন্যান্য প্রস্তাবিত স্থানের তুলনায় ক্যাম্পাসের জীববৈচিত্র্য উল্লেখিত স্থানটিতে প্রজাতির বৈচিত্র্য সূচক (PSDI) এর বিবেচনায় নেতিবাচক প্রভাব অনেক কম হওয়ায় বাস্তুতান্ত্রিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি আনুপাতিক হারে অনেক কম হবে বলে টিএমসির সদস্যগণ জানিয়েছেন। এই স্থানের ইকোলজিক্যাল ও অর্থনৈতিক মূল্য ক্যাম্পাসের অন্য যেকোনো বাস্তুসংস্থানের চেয়ে অনেক কম। যেহেতু, ক্যাম্পাসে গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম মানসম্মতভাবে পরিচালনার জন্য সম্প্রসারিত নতুন এই ভবন নির্মাণের আবশ্যকতা রয়েছে, সেহেতু, এই স্থানে ভবন নির্মাণ করা হলে জীববৈচিত্র ও পরিবেশের জন্য সর্বাপেক্ষা কম ক্ষতি হবে এবং ভবনটি অধিকতর ব্যবহার উপযোগী হবে। এখানে টিএমসির পক্ষ থেকে গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের নতুন ভবন নির্মাণ করার জন্য উল্লেখিত জায়গাটি সর্বসম্মতভাবে সুপারিশ করা হয়। উল্লেখ্য, গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের নতুন ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত উপাচার্য কিংবা অন্য কেউ এককভাবে গ্রহণ করেনি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আরও জানাচ্ছে যে, প্রশাসন সকলের মতামতের ওপর শ্রদ্ধাশীল। গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের সম্প্রসারিত ভবন নির্মাণের জন্য নির্ধারিত স্থানের চেয়ে অধিকতর উপযোগী স্থান নির্ধারণে যেকোনো যৌক্তিক ও বাস্তবসম্মত মতামতকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন স্বাগত জানাবে।

প্রসঙ্গ: সংশোধিত পূর্ণ্যাঙ্গ মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপ

সংশ্লিষ্ট সকলের অবগতির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন আরও জানানো যাচ্ছে যে, বর্তমান প্রশাসন দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই সকল অংশীজনের বহুল প্রত্যাশিত সংশোধিত পূর্ণাঙ্গ মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের কাজ শুরু করেছে এবং তা চলমান রয়েছে। এ লক্ষ্যে প্রাক্কলিত ৪ কোটি ১১ লাখ ৩৫ হাজার ৩শ টাকা বরাদ্দ প্রদানের জন্য ১৮ নভেম্বর, ২০২৪ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নিকট পত্র দেওয়া হয়েছে। এ অর্থ প্রাপ্তির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সঙ্গে একাধিকবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের যোগাযোগ হয়েছে। সর্বশেষ গত ১৭ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন অর্থ প্রাপ্তির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। অন্যদিকে প্রকল্পটি ডিসেম্বর ২০২৪ এর মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল এবং নির্ধারিত সময়ে কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় প্রকল্পের বরাদ্দ প্রত্যাহার করা হবে মর্মে অবগত করা হয়। নতুন প্রশাসন গণঅভ্যুত্থানকালীন অচলাবস্থা ও সঙ্কটের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে (প্রজেক্ট ইমপ্লিমেন্টেনশন কমিটি (পিআইসি) ও প্রজেক্ট স্টিয়ারিং কমিটি (পিএসসি) অবহিত করে, তা বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রকল্পের নির্ধারিত মেয়াদ-ডিসেম্বর ২০২৬ পর্যন্ত বৃদ্ধি করে। উল্লেখ্য, প্রকল্পটি নির্ধারিত মেয়াদের (ডিসেম্বর ২০২৬) মধ্যে বাস্তবায়নের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বাধ্যবাধকতা রয়েছে।  

এমতাবস্থায়, প্রকল্পের বরাদ্দ যেন বাতিল না হয় সেই বিবেচনায় টিএমসির মতামত গ্রহণ করে গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের নতুন সম্প্রসারিত ভবন নির্মাণের স্থান নির্ধারণ করা হয়।  উল্লেখ্য যে, মাস্টারপ্ল্যান কমিটির ৪ জন সদস্য টিএমসি’তে থাকায় স্থান নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ-প্রকৃতির বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করবে মর্মে প্রশাসন আস্থাশীল রয়েছে। বলা বাহুল্য যে, সংশ্লিষ্ট কমিটি এই ভবন দু’টি যথাসময়ে মাস্টারপ্ল্যানে অন্তর্ভুক্ত করা হবে মর্মে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। 

প্রসঙ্গত আরো উল্লেখ্য যে, প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশীজনদেরও যে কোনো যৌক্তিক মতামতের আলোকে বাস্তবভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সর্বদাই অঙ্গীকারবদ্ধ রয়েছে। 

 

মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, পিএইচডি

পরিচালক (ভারপ্রা

Recent Press Releases